উইকেট ভালো হলে বিদেশি ব্যাটারদের ভালো খেলা সহজ হয়। তারা নিজের মতো করে খেলতে পারেন, ব্যাট জ্বলে ওঠে। সবচেয়ে বড় কথা, বাংলাদেশের ব্যাটারদের সঙ্গে তাদের পার্থক্যটা পরিষ্কার ফুটে ওঠে। তাদের ব্যাটিং বলে দেয় স্থানীয় ব্যাটারদের সঙ্গে বিদেশি ব্যাটারদের পার্থক্য আসলে কতটা?
রোববার রাউন্ড রবিন লিগের শেষ দিন শেরে বাংলার ব্যাটিং ফ্রেন্ডলি উইকেটে আরও একবার সেই সত্যের দেখা মিললো। তিন বিদেশি উইল জ্যাকস, ফাফ ডু প্লেসি ও আন্দ্রে ফ্লেচার চোখে আঙুল দিয়ে দেখালেন, বাংলাদেশের ব্যাটারদের সঙ্গে তাদের গুণগত মানের পার্থক্য কতটা?
দিনের প্রথম ম্যাচে জ্যাকস দেখিয়েছেন। তার ৫৭ বলে ৯২ রানের উত্তাল ইনিংসে বারবার মনে দিচ্ছিল বল মোটামুটি গতি-উচ্চতায় ব্যাটে আসলে সাবলীল ব্যাটিং করা যায়, রানের নহর বইয়ে দেওয়া সম্ভব। চার-ছক্কার ফুলঝুরিতে মাঠ মাতানোর পাশাপাশি প্রতিপক্ষ বোলিং তছনছ করে দেওয়া যায়।
বিকেলে শেরে বাংলায় ব্যাট হাতে জ্বলে উঠেছিলেন চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্সের তরুণ ইংলিশ ব্যাটার উইল জ্যাকস। তার হাত ধরেই সিলেট সানরাইজার্সের ১৮৬ রানের টার্গেট তাড়া করে ৪ উইকেটের দারুণ জয়ে শেষ চারে চট্টগ্রাম।
পরে সন্ধ্যায় দেখা মেলে আরেকটি দারুণ ইনিংসের। এবার ব্যাটিং কারিশমা দেখান কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের দক্ষিণ আফ্রিকান ব্যাটার ফাফ ডু প্লেসি। প্রথম দুই ম্যাচে দুই অঙ্কে (২ ও ৬) যেতে পারেননি ডু প্লেসি। তৃতীয় ম্যাচে খেলেন ৮৩ রানের এক বড় ইনিংস।
তারপর আবার রানখরায় ভোগা (৮, ০*, ২ ও ৩৮)। অবশেষে রোববার খুলনার বিপক্ষে সেঞ্চুরি, ৫৪ বলে ১০১ রানের দ্যুতিময় ইনিংস। যেখানে ছিল ২৯ সিঙ্গেল, ৩ ডাবল, এক ডজন বাউন্ডারি ও তিন ছক্কার মার।
কিন্তু রাতে ডু প্লেসির এই ইনিংস ঢাকা পড়ে গেলো আন্দ্রে ফ্লেচারের চওড়া ব্যাটে। এ ক্যারিবিয়ানের হার না মানা শতকে কুমিল্লার রান পাহাড় (১৮২) টপকে ৯ উইকেটের অবিস্মরণীয় জয়ে সেরা চারে খুলনা টাইগার্স।
ফ্লেচারের ইনিংস সাজানোর প্রক্রিয়াও উইল জ্যাকসের মতোই। উইল জ্যকস ৯২ করেছিলেন ৫৭ বলে। তার ওই ইনিংস গড়ে উঠেছিল ২৬ সিঙ্গেলস, ৫ ডাবলস, ৮ বাউন্ডারি ও ৪ ছক্কায়। ডু প্লেসির ১০১ রানের ইনিংস গড়ে উঠেছিল ৫৪ ডেলিভারি থেকে।
ফ্লেচারের হার নামা ম্যাচ জেতানো শতক ১০১ রানের ইনিংসটি বেড়িয়ে আসে ৬২ বলে। ৫৯ বলে শতরান পূর্ণ করার পথে ফ্লেচার সিঙ্গেল নেন ২৪টি, ডাবলস ছিল ৮টি। চার হাঁকিয়েছেন ছয়টি, ছক্কা মেরেছেন ছয়টি। ডু প্লেসির (৭) তুলনায় জ্যাকস (১৪) ও ফ্লেচার (১৫) ডট বল দিয়েছেন বেশি।